Wednesday, April 17, 2019

চট্টগ্রামের বিখ্যাত মেজবান


মেজবান মেজবান মেজবান !!! শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা। অনেক প্রশংসা মেজবান খাবারের তাই ঠিক করলাম অন্তত একবার হইলেও মেজবান খাওয়া দরকার।মেজবান মানেই চট্টগ্রাম আর চট্টগ্রাম মানেই মেজবান। চট্টগ্রামের এর ঐতিহ্যবাহী খাবার এর তালিকা তৈরী করতে বসলে সবচে প্ৰথমেই আসবে মেজবান।ধারণা করা হয় মেজবান শব্দটি ফরাসি শব্দ  ‘মেজোয়ানি’ ও ‘মেজমান’ এই দুটি শব্দ থেকে আসছে মেজোয়ানি অর্থ আপ্যায়নকারী ও মেজমান অর্থ আপ্যায়ন।তবে চট্টগ্রাম এর আঞ্চলিক ভাষায় ‘মেজ্জান’ বলা হয়। চট্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী অঞ্চলে মেজবানি ‘জেয়াফত’ নামে বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয়।কতো বছর থেকে মেজবান চট্টগ্রামে প্রচলিত এটা বলা কঠিন তবে রাজধানী ঢাকায় মেজবানির প্রচলন শুরু হয় জাতীয় অধ্যাপক ডা. নূরুল ইসলামের চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকার সভাপতি (১৯৬৮-৮৩) থাকাকালে। তাঁর অনুরোধে তেজগাঁওস্থ বাবলী ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক প্রয়াত মোজাম্মেল হক একক আয়োজনে মেজবানির প্রচলন করেন যা পরবর্তীতেকালে বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টারের ক্ষুদ্র গন্ডি ছাড়িয়ে ধানমন্ডির সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে প্রায় অর্ধলক্ষ লোকের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।মেজবানের রান্নার রয়েছে আলাদা বিশেষত্ব। মূল পদ গরুর মাংস হলেও এই মাংস রান্নার ধরন আলাদা। মসলাও ভিন্ন  চট্টগ্রামের বিশেষ অঞ্চলে উৎপাদিত বিশেষ স্বাদযুক্ত মরিচ-হলুদ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।শুধু তা-ই নয়, রান্নার ডেকচি থেকে শুরু করে চুলা পর্যন্ত আলাদা। চট্টগ্রামী মেজবানি রান্নার বাবুর্চি ও তাদের সহকর্মী সকলেই চট্টগ্রামের লোক বংশপরম্পরায় তাঁরা এই ঐতিহ্যের ধারা অব্যাহত রেখেছেন।গরুর মাংসের জন্য আদিকাল থেকেই চট্টগ্রাম প্রসিদ্ধ। এখানকার লাল গরু (রেড ক্যাটল অব চিটাগাং) সবচেয়ে উন্নত দেশী গরুর জাত। মূলত চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, চন্দনাইশসহ সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে এ গরু উত্পাদন হয় বেশি। দেখতে সুন্দর এ গরু আকারে ছোট হলেও মাংস সুস্বাদু, পুষ্টিকর। মেজবানে মূলত লাল গরুর ব্যবহারই সবচেয়ে বেশি।মূলত মেজবানীতে সাদা ভাতের সঙ্গে তিন বা চার ধরণের তরকারি পরিবেশিত হয় যেমন গরুর মাংস, নলা কাঁজি ও কলই বা বুটের ডাল। এর রন্ধন প্রণালী বৈশিষ্টপূর্ণ, যেমন (ক) মরিচ ও মসলা সহযোগে রান্না করা ঝাল গোসত; (খ) গরুর নলা দিয়ে কম ঝাল, মসলাটক সহযোগে রান্না করা শুরুয়া বা কাঁজি, যা নলা কাঁজি নামে পরিচিত; (গ) মাসকলাই ভেজে খোসা ছাড়িয়ে ঢেঁকিতে বা মেশিনে গুড়ো করে এক ধরনের ডাল রান্না করা হয়। এটাকে ‘ঘুনা ডাল’ বলে; (ঘ) কলইর ডালের পরিবর্তে বুটের ডালের সাথে হাঁড়, চর্বি ও মাংস দিয়ে হালকা ঝালযুক্ত খাবার তৈরি করা হয়।ঢাকায় বইসা চট্টগ্রামের মেজবান খাবারের স্বাদ খুঁজে পাওয়াটা বেশ কষ্টের বিষয় হবে এতে কোনো সন্দেহ নাই তারপরও খুঁজে খুঁজে দুই একটা হোটেল পাওয়া যায় যেখানে মেজবানি খাবার পাওয়া যায়।সেই রকমই একটা রেস্টুরেন্ট চিটাগং বুল এ খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। খুব সম্ভব চিটাগং বুল এর ঢাকায় তিনটি শাখা গুলশান ,উত্তরা ,খিলগাঁও লক্ষ রাখতে হবে মেনু কিন্তু একটু ভিন্ন হয় ,সব খাবার সব ব্রাঞ্চ এ থাকে না গুলশান ব্রাঞ্চ সব চে ভালো তিনটার মাঝে. শুক্র বার দুপুর বেলা মেজবান খাওয়ার উদ্দেশে খিলগাঁও ব্রাঞ্চ এ যাবার পর কিছু কিছু আইটেম না পাওয়াতে মন খারাপ হলেও খিলগাঁও চিটাগং রেড বুল এর ব্রাঞ্চ টা কিন্তু খুব সুন্দর করে সাজানো পরিবার ও বন্ধু বান্ধব দের নিয়ে খাবার জন্য খুব সুন্দর ছিমছাম পরিবেশ রেস্টুরেন্টর কর্মচারী দের ব্যাবহার ও খুব ভালো লেগেছে খাবারের দামের বিষয়ে বিবেচনা করলে আমার কাছে কিন্তু খুব শস্রই লেগেছে তবে মেজবানি এক বাটি নিলে কিন্তু দুই জন মোটামুটি ভাগভাগী করে খাওয়া যায় চিটাগং বুল এ যেয়ে মেজবান খাবার স্বাদ নিয়ে দেখতে পারেন নিচে তিনটা ব্রাঞ্চ এর ঠিকানা দিয়ে দিচ্ছি গুলশানের ঠিকানা  ১১২ গুলশান এভিনিউ ,শাজালাল ইসলামী ব্যাংক এর উল্টা দিকে, খিলগাঁও এর ব্রাঞ্চ টা হচ্ছে আপন কফি হাউস এর উল্টা দিকে আর উত্তরার ঠিকানা ৩২ সোনারগাঁও জনপদ ঢাকা।